জেলায় সারা বছরই বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়। সহনীয় মাত্রায় কীটনাশকের ব্যবহার ও নিরাপদ সবজির জন্য দেশে ও বিদেশে উৎপাদিত সবজির চাহিদা রয়েছে প্রচুর। জেলার বাঁধাকপি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রফতানি হচ্ছে দেশের বাইরে।
এ বছর ৪৫ জন কৃষকদের কাছ থেকে ৭৫ একর বাঁধাকপির জমি থেকে এরইমধ্যে ৭০০ মে. টন বাঁধাকপি মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং তাইওয়ানে রফতানি করা হয়েছে। মান ভাল হওয়ায় আরো চাহিদার সৃষ্টি হচ্ছে। নিরাপদ সবজি হিসেবে চলতি মৌসুমে এসব দেশে এ বছর এক হাজার মেট্রিক টন বাঁধাকপি সরবরাহ করা হবে বলে জানান রফতানিকারকরা।
এগ্রো ফ্রেশ নামের একটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান কৃষি অফিসের সহায়তায় মাঠ থেকে বাঁধাকপি সংগ্রহ করছেন। ক্ষেত থেকে সাদা কাগজে মুড়িয়ে বস্তাভর্তি করে রফতানি উপযোগী করছেন কৃষকরা। মাঠ থেকে বাঁধাকপি বিক্রির ফলে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, বিঘা চুক্তিতে কপি দিচ্ছেন। দেশের মধ্যে বিক্রি করলে ২০/২২ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। বিদেশে যাচ্ছে সেখানে দ্বিগুণ লাভ হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিদেশ যাওয়াতে ৫৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।
এগ্রো ফ্রেশের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ম্যানেজার রুবেল আহমেদ বলেন, গত বছর মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে রফতানি করা হয়েছিলো। এ বছর নতুন দেশ হিসেবে তাইওয়ানেও বাঁধাকপি যাচ্ছে। এ বছরে গাংনী উপজেলায় কোম্পানির চুক্তিবদ্ধ ৪৫ জন কৃষকের ৭৫ একর জমি থেকে নিরাপদ উপায়ে চাষ করা হয়েছে বাঁধাকপি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান, কৃষি বিভাগ সব সময়ই নিরাপদ সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করে আসছে। নিরাপদ সবজির বাজার তৈরি করতে পারলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এ বছর মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে নিরাপদ সবজি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে বাঁধাকপি রফতানি করা হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক জানান, কৃষি বিভাগ ও সরকারের নানামুখি উদ্যোগের কারণে জেলার বাঁধাকপি আজ দেশের বাইরে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা লাভবান হবে।
মেহেরপুরের ডিসি ড. মুনসুর আলম খান বলেন, কৃষক তাদের ফসল উৎপাদন করে দাম না পেলে হাসির পরিবর্তে কান্নার উৎস হয়ে থাকে। আজ সাহারবাটির মাঠের বাঁধাকপি দেশের গণ্ডি ছেড়ে বিদেশে রফতানি হচ্ছে। এতে কৃষকরা আরো উৎসাহিত হবে।
সবজি ভান্ডার খ্যাত মেহেরপুর জেলার সবজি শুধু বাঁধাকপি নয়, অন্যান্য সবজিও আগামীতে দেশের বাইরে যাবে এমনটিই প্রত্যাশা করছেন জেলার কৃষকরা।
Leave a Reply